ওরেশনিক’–এর ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করছে ইউক্রেন
- By Jamini Roy --
- 25 November, 2024
ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে রাশিয়া প্রথমবারের মতো শক্তিশালী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। গত বৃহস্পতিবার ছোড়া এই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম ‘ওরেশনিক’, যা ঘণ্টায় ১৩,০০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। বর্তমান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র থামানো প্রায় অসম্ভব বলে দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ইউক্রেনের বিশেষজ্ঞরা ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে রাশিয়ার অস্ত্র উৎপাদন ও সামরিক সরবরাহব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি এ ধরনের হামলা প্রতিরোধের উপায় খুঁজছেন।
ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিসের তদন্ত কর্মকর্তা ওলেহ বলেন, "এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ এই প্রথম ইউক্রেনের ভূখণ্ডে পাওয়া গেছে।" বিশেষজ্ঞরা নিরাপত্তার কারণে সাংবাদিকদের কাছে সীমিত তথ্য প্রদান করেছেন এবং কোনো প্রশ্ন গ্রহণ করেননি।
এই হামলার ফলে ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
পুতিন বলেছেন, হাইপারসনিক ‘ওরেশনিক’ শব্দের চেয়ে ১০ গুণ গতিতে ছুটতে পারে এবং এটি উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ দ্রুতগামী এবং পথিমধ্যে দিক পরিবর্তন করতে সক্ষম, যা প্রতিরোধকে অত্যন্ত কঠিন করে তোলে।
নিপ্রোতে হামলার পর এক ভাষণে পুতিন বলেন, এ ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাকে ভেদ করে সফলভাবে আঘাত হেনেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ হামলাকে যুদ্ধ-উত্তেজনার গুরুতর বৃদ্ধি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক মিত্রদের যোগ্য প্রতিক্রিয়া জানাতে অনুরোধ করেছেন।
প্রথমে ইউক্রেন এটিকে আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বলে দাবি করলেও পরে ক্রেমলিন জানায় এটি একটি নতুন মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। রাশিয়া বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় আঘাত হানার প্রতিশোধ হিসেবেই এটি ছোড়া হয়েছে।
পেন্টাগন জানিয়েছে, ‘ওরেশনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার ‘আরএস-২৬ রুবেজ’ নামক আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ। এটি রাশিয়ার সামরিক শক্তির একটি বড় প্রদর্শন এবং চলমান যুদ্ধের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
নিপ্রোতে ‘ওরেশনিক’ ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার ইউক্রেন যুদ্ধের বিপজ্জনক মোড় নির্দেশ করে। ইউক্রেন এই হামলার প্রতিরোধের কৌশল নিয়ে কাজ করছে, তবে এই উন্নত অস্ত্র ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।